চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর বাংলায় তেমন বই নেই। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে এ নিয়ে পাঠের, জানার বা সচেতন হওয়ার সুযোগ কম। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর বাংলায় লেখালেখি বেশি দরকার।
গতকাল বিকালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ডা. প্রণব কুমার চৌধুরীর ছয় খণ্ডের ‘ছোটদের চিকিৎসা সমগ্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ তাগিদ দেন।
বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, উনিশ শতকের গোড়ার দিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রথম বাংলায় লেখালেখি শুরু হয়। পরে এ ধারা শুকিয়ে যায়। এরপর ষাটের দশকে ভাষা আন্দোলন কেন্দ্র করে আবার লেখালেখি শুরু হয়। তিনি বলেন, বাংলায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের বই নেই। সাধারণ পাঠকদের জন্য বাংলায় বই থাকা বেশি দরকার। ডা. প্রণব কুমার চৌধুরীকে এজন্য অভিনন্দন জানাই।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ১৮১৭ সালে বাংলায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের লেখালেখি শুরু হয়। আর এটা শুরু করেন ইংরেজরা। ১৮৫২ সালে ফিলিক্স কেরি আর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রথম বাংলায় লেখা শুরু করেন। সার্জারির বই প্রথম লেখেন জহিরউদ্দিন আহমদ। প্রণব কুমার চৌধুরী তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করায় ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকলেন।
প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ’৯০ সালে এফসিএস করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে কাজ শুরু করি। তখন শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে তেমন ধারণা ছিল না মায়েদের। বার্লি যে শিশু কুখাদ্য তা নিয়েই প্রথম লিখি।
এখনো উল্লেখযোগ্য শিশু পূর্ণ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। আর কন্যা শিশুর মৃত্যুহার বেশি। ছেলে শিশুর বেলায় তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিলেও মেয়ে শিশুর বেলায় প্রথমে টোটকা চিকিৎসা নেয়া হয়। এটার পরিবর্তন করতে হবে। এজন্য একাডেমিক ও নন-একাডেমিক লেখাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, ছোটদের চিকিৎসা করা খুব কঠিন। কেননা তারা বলতে পারে না। তাই উপসর্গ বুঝে, রোগ নির্ণয় চিকিৎসা দেয়াটা দুরূহ ব্যাপার।